কলকাতা: ফাঁসি নয়, আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দেওয়া হল আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) একমাত্র অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে (Sanjay Roy)। শনিবার শিয়ালদহ আদালত (Sealdah Court) ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের জন্য মৃত্যু), ১০৩ (১) (খুন) ধারায় তাঁকে দোষী ঘোষণা করে। অবশেষে ঘটনার ১৬৪ দিন পর তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (Life Imprisonment) সাজা শোনানের বিচারক অনির্বাণ দাস। যদিও সোমবার সিবিআই এবং নির্যাতিতার পরিবার সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়েছিলেন বিচারকের কাছে। এদিকে সিভিক ভলান্টিয়ারের আইনজীবী তাঁকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তাহলে কি সেই কথাই রাখলেন বিচারক? সেটা এবার বিশ্লেষণ করে দেখা যাক।
সোমবার আদালতে সিবিআইয়ের (CBI) আইনজীবীর বলেন, “এই ঘটনায় সঞ্জয় যুক্ত। বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা। ফাঁসির সাজা দেওয়া উচিত। সরকারি হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। গোটা সমাজ এই মামলার দিকে তাকিয়ে। কারণ নির্যাতিতার বাবা-মা সন্তানকে হারিয়েছেন।”এদিকে নির্যাতিতার (Victim) আইনজীবী বলেন, “সমস্ত অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে অভিযুক্তের আর জি কর হাসপাতালে যাতায়াত ছিল। তাকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে। সর্বোচ্চ সাজা চাইছি।” অন্যদিকে সঞ্জয়ের আইনজীবী মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে বলেন, “মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে নই, সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে।”
আরও পড়ুন: কেন সঞ্জয় রায়কে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল না? জেনে নিন আসল কারণ
এদিকে আবার সোমবারও বারবার নিজেকে ‘নির্দোষ’ বলে দাবি করেছেন সঞ্জয় রায়। তিনি এদিন আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমি এই কাজ করিনি। বিনা কারণে ফাঁসিয়েছে। আমি যদি কাজটা করতাম তাহলে আদালতে আসার পর আমি জানতে পেরেছি এত কিছু নষ্ট হয়েছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিলো।সেটা তাহলে নষ্ট হয়ে যেত। আমাকে প্রথমদিন থেকেই ফাঁসানো হয়েছে পুলিশি হেফাজতে অত্যাচার করা হয়েছে। এখানে ওখানে সই করাচ্ছে লেখাচ্ছে।” পাশাপাশি এইনি এদিন এও অভিযোগ করেন, “সিবিআই হেফাজতে যাওয়ার পর সিবিআই বলল মেডিকেল করাতে নিয়ে যাবে। আমায় গাড়িতে তুলে বেহালা থেকেই গাড়ি ঘুরে যায়। জোকা ইএসআইতে মেডিকেল হল না। ইএসআই পর কমান্ডেও হল না। আদালতে এসে হলো। আপনি বিচার করুন স্যার।”
অর্থাৎ, এই মামলায় এখনও যে অনেক প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে, তার একটা আভাষ পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে সাজা ঘোষণার আগে বিচারক সঞ্জয়ের থেকে জানতে চান যে, তাঁর বাড়িতে কে রয়েছেন। উত্তরে শুধুমাত্র মায়ের কথা বলেন সঞ্জয়। খবর নিয়ে দেখা গিয়েছে, তাঁর মা মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন। তাহলে কি মায়ের কথা ভেবেই ছেলেকে মৃতুদণ্ড দেওয়া হল না? যদিও সাজার কারণ হিসেবে বিচারক জানিয়েছেন, এই ঘটনাকে নাকি ‘বিরলতম’ ঘটনা বলে মনে হয়নি। কিন্তু শুধু কি এটাই কারণ? প্রশ্নটার উত্তর এখনও যেন ধোঁয়াশার মধ্যেই রয়ে গিয়েছে।
দেখুন আরও খবর: